বর্তমানে বাংলাদেশে স্ক্যাবিস (Scabies) রোগটি মহামারি আকারে ছড়িয়ে পড়ছে। এটি একটি তীব্র চর্মরোগ, যা Sarcoptes Scabiei নামক একধরনের ক্ষুদ্র পরজীবী মাইটের মাধ্যমে হয়। রোগটি চরম সংক্রামক এবং প্রধান উপসর্গ হিসেবে তীব্র চুলকানি দেখা দেয়।
স্ক্যাবিসের ভয়াবহতা
১. অসহনীয় চুলকানি: বিশেষ করে রাতে চুলকানি তীব্র আকার ধারণ করে, ঘুমে ব্যাঘাত ঘটায় এবং শিশুদের ক্ষেত্রে কান্নার কারণ হয়।
২. চামড়ায় ক্ষত: চুলকানোর ফলে ত্বকে ফুসকুড়ি ও ঘা দেখা দেয়, যা থেকে ইনফেকশন হতে পারে।
৩. পরিবারে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে: এক সদস্য আক্রান্ত হলে পুরো পরিবার ঝুঁকিতে পড়ে।
৪. সেকেন্ডারি ইনফেকশন: সঠিক চিকিৎসা না হলে ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণ, সেলুলাইটিস এবং শিশুদের কিডনি সমস্যার ঝুঁকি বাড়ে।
৫. মানসিক চাপ: অতিরিক্ত অস্বস্তি ও যন্ত্রণা শিশুর মানসিক স্থিতিশীলতায় প্রভাব ফেলে।
স্ক্যাবিস থেকে মুক্তির উপায়
১. চিকিৎসা:
-
পারমেথ্রিন ৫% (Permethrin): সবচেয়ে কার্যকর সমাধান। শরীরের গলা থেকে পা পর্যন্ত ক্রিম লাগিয়ে ১০-১২ ঘণ্টা রেখে ধুয়ে ফেলতে হবে।
-
আইভারমেকটিন (Ivermectin): জটিল ও পুনঃসংক্রমণের ক্ষেত্রে এই ওষুধ কার্যকর।
-
অ্যান্টিহিস্টামিন: চুলকানি কমাতে ব্যবহৃত হয়।
-
বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ: শিশু ও গর্ভবতী নারীদের চিকিৎসায় অবশ্যই বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিতে হবে।
২. পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা:
আক্রান্ত ব্যক্তির ব্যবহৃত পোশাক, বিছানার চাদর ও তোয়ালে গরম পানিতে সিদ্ধ করে ধুয়ে রোদে শুকাতে হবে।
৩. পরিবারের সবাইকে চিকিৎসা:
পরিবারের সব সদস্যকেই একসঙ্গে চিকিৎসা গ্রহণ করতে হবে, এমনকি যাঁদের উপসর্গ নেই তাঁদেরও।
৪. ব্যক্তিগত পরিচ্ছন্নতা:
নিয়মিত হাত ধোয়া এবং বাইরে থেকে এসে শরীর ভালোভাবে পরিষ্কার রাখা জরুরি।
বিশেষ সতর্কতা
-
শিশুদের ক্ষেত্রে শিশু বিশেষজ্ঞ এবং গর্ভবতী নারীদের ক্ষেত্রে গাইনোকোলজিস্টের পরামর্শ নিন।
-
আক্রান্তদের ব্যবহৃত জিনিসপত্র তিন দিন আলাদা রাখুন।
সতর্কবার্তা
স্ক্যাবিসকে অবহেলা করবেন না। নিয়মিত পারমেথ্রিন ব্যবহার এবং পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখুন।
মনে রাখবেন:
আপনার সচেতনতা আপনাকে এবং আপনার পরিবারকে সুস্থ রাখতে সহায়তা করবে। এই বার্তা শেয়ার করে সবাইকে জানার সুযোগ দিন।