আমরা কেমন দেশে বসবাস করছি— এটা কি কখনো ভেবে দেখেছি? এমন এক দেশে, যেখানে অন্যায়ের প্রতিবাদে দাঁড়ালেই জীবন ঝুঁকির মুখে পড়তে হয়, চাঁদাবাজি বা দুর্নীতির খবর প্রকাশ করলেই টার্গেটে পরিণত হতে হয়। সাংবাদিকতার মূল কাজ হচ্ছে সত্য তুলে ধরা, কিন্তু আজ সেই সত্য বলার জন্যই জীবন দিতে হচ্ছে সাংবাদিকদের।
সম্প্রতি সাহসী ও নীতিবান সাংবাদিক রাজিব আহমেদ মাদকের বিরুদ্ধে ধারাবাহিকভাবে রিপোর্ট প্রকাশ করছেন। মাদক—যা আমাদের যুব সমাজকে ধ্বংসের দিকে ঠেলে দিচ্ছে—তার বিরুদ্ধে দাঁড়ানোই ছিল তার অপরাধ! এর জেরে অজ্ঞাত পরিচয় ব্যক্তিরা মোবাইল ফোনে কল করে তাকে প্রকাশ্যে প্রাণনাশের হুমকি দিয়েছে। অথচ রাজিব আহমেদ সেই মানুষ, যিনি কোনো অন্যায়ের কাছে মাথা নত করেননি, এবং যিনি সবসময় সত্য ও ন্যায়ের পক্ষে দাঁড়িয়েছেন।
বাংলাদেশের বাস্তবতা এখন ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। গতকাল আমরা হারিয়েছি আরেক সাংবাদিক, আসাদুজ্জামান তুহিনকে—প্রকাশ্যে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়েছে তাকে। আর আজ মৃত্যুর হুমকির মুখে রয়েছেন রাজিব আহমেদ। প্রশ্ন জাগে— আগামীকাল কাকে হারাব? এই ধারাবাহিক নিপীড়ন, হত্যা ও হুমকি বন্ধ না হলে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা কি আর টিকবে? সাংবাদিকরা কি আর নিরাপদে কাজ করতে পারবে?
প্রতিদিনই যেন নিঃশব্দে হত্যার মঞ্চ সাজানো হচ্ছে, আর রাষ্ট্র যেন নির্বিকার দর্শকের ভূমিকা পালন করছে। এভাবে যদি চলতে থাকে, তাহলে সত্য বলার মানুষদের সংখ্যা হয়তো একদিন শূন্যে নেমে আসবে। তখন আর কেউ কথা বলবে না, কেউ লিখবে না— শুধু নীরবতা আর অন্ধকার গ্রাস করবে আমাদের সমাজকে।