চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন বলেছেন, “ক্যারিয়ার যাই হোক, একজন শিক্ষার্থীর মূল লক্ষ্য হওয়া উচিত ভালো মানুষ হওয়া। যদি আমরা ভালো মানুষ হিসেবে সমাজকে আলোকিত করতে পারি, সেটাই হবে জীবনের সবচেয়ে বড় অর্জন।”
বুধবার (১৮ জুন) দুপুরে অক্সিজেন-কুয়াইশ সংযোগ সড়কের নয়াহাট সংলগ্ন পাঁচলাইশ সৈয়দ মোহাম্মদ নাছির উদ্দিন সিটি কর্পোরেশন মহিলা কলেজের বার্ষিক ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
পরিচ্ছন্নতা ও স্বাস্থ্য সচেতনতার ওপর জোর
মেয়র বলেন, “জলাবদ্ধতা দূর করতে আমি খাল ও নালা পরিষ্কার করছি ঠিকই, কিন্তু স্থায়ী সমাধান তখনই হবে যখন নাগরিকদের দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন হবে। ময়লা যত্রতত্র না ফেলে ডাস্টবিন ব্যবহারের অভ্যাস গড়তে হবে। এজন্য আমি স্কুল পর্যায় থেকেই সচেতনতা তৈরির কাজ শুরু করেছি।”
তিনি জানান, “আমরা স্কুল হেলথ কার্ড চালু করেছি যাতে শিক্ষার্থীরা ছোটবেলা থেকেই স্বাস্থ্যবিষয়ক সচেতনতা তৈরি করতে পারে। শুধু শারীরিক পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা নয়, বর্জ্য ব্যবস্থাপনার দিকেও গুরুত্ব দিতে হবে।”
শিক্ষার্থীদের প্রতি অনুপ্রেরণামূলক বার্তা
ডা. শাহাদাত বলেন, “স্কুল-কলেজ জীবনের শিক্ষা হলো ভবিষ্যতের ভিত্তি। শুধু ডিগ্রি অর্জন যথেষ্ট নয়—ভালো মানুষ না হলে সে অর্জনের কোনো মূল্য নেই। একজন শিক্ষার্থী তার শিক্ষক, প্রতিষ্ঠান এবং যত্ন নেওয়া স্যার-ম্যাডামদের ভুলে গেলে চলবে না। শিকড়কে মনে রাখলেই শিক্ষার পূর্ণতা আসে।”
তিনি আরও বলেন, “এই শহর শুধু আমার একার না—আমাদের সবার। নাগরিকদের সচেতন অংশগ্রহণ ছাড়া একটি শহর গ্রীন, ক্লিন, হেলদি এবং সেফ হতে পারে না।”
জলাবদ্ধতা নিরসনে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা
জলাবদ্ধতা বিষয়ে মেয়র জানান, “আমি প্রতিটি খালের উৎস ও গন্তব্য নিয়ে স্টাডি করছি। রাতারাতি সমাধান সম্ভব না হলেও দুই-তিন বছরের মধ্যে দৃশ্যমান অগ্রগতি হবে ইনশাআল্লাহ। কারণ আমি সমস্যার শিকড়ে হাত দিয়েছি।”
অনুষ্ঠান আয়োজন ও অন্যান্য বক্তারা
চসিকের প্রধান শিক্ষা কর্মকর্তা ও উপসচিব ড. কিসিঞ্জার চাকমার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মিসেস জারেকা বেগম। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন কলেজের প্রভাষক শিবু চন্দ্র দাস ও ফারহানা আজিজ।
বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন:
-
কলেজ গভর্নিং বডির শিক্ষানুরাগী সদস্য জি এম আইয়ুব খান
-
রাজনীতিবিদ শামসুল আলম
-
ডা. এস এম সারোয়ার আলম
-
কলেজের প্রতিষ্ঠাতা নাছির উদ্দীনের সন্তান ও দাতা সদস্য এস এম ফজলুল বারি
-
কলেজের প্রাক্তন অধ্যক্ষ জয়নব বেগম
শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে বক্তব্য দেন তাবাচ্চুম রশিদ তাসমি ও হুমায়রা পারভীন মাহি। মানপত্র পাঠ করেন সাবরা সুলতানা, কোরআন তেলাওয়াত করেন খাদিজাতুল কোবরা এবং গীতা পাঠ করেন ইতু নন্দী।
শেষে মেয়র বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন এবং যারা পুরস্কার পাননি তাদের ভবিষ্যতে ভালো করার আহ্বান জানান।