রেলস্টেশনের টোকাই থেকে শুরু। তারপর পুলিশের সোর্স। আর এখন থানার অলিখিত “ক্যাশিয়ার”! রাতারাতি কোটিপতি বনে যাওয়া এই ব্যক্তির নাম—**মো. অলি ওরফে ক্যাশিয়ার অলি**।
অভিযোগ আছে, নোয়াখালীর সূবর্ণচরের এই ব্যক্তি শুধু পুলিশের ছত্রছায়ায় বড় হননি, বরং গোটা অপরাধ জগতকে একসময় নিয়ন্ত্রণ করতেন। মাদক, জুয়া, দেহ ব্যবসা, ফুটপাত দখল, ট্রাকস্ট্যান্ড, হোটেল—সব জায়গাতেই চলতো তার চাঁদাবাজির রাজত্ব। এমনকি সাংবাদিকরা প্রতিবেদন করলে সরাসরি জেলে পাঠানোর হুমকি দিতেন তিনি।
আওয়ামী লীগ আমলে চেয়ারম্যান নির্বাচনে অংশ নিয়ে প্রভাব আরও বিস্তার করেন অলি। বিলাসবহুল গাড়ি, অর্থ আর আতঙ্ক—সব মিলিয়ে তিনি হয়ে ওঠেন নগরীর আন্ডারওয়ার্ল্ডের এক প্রভাবশালী নাম।
সরকার পতনের পর কিছুদিন আড়ালে থাকলেও এখন আবার নতুন করে নগরের আকবরশাহ এলাকায় সক্রিয় হয়ে উঠেছেন তিনি। অভিযোগ—**“থানার ক্যাশিয়ার” পরিচয়ে নিয়মিত চাঁদা তুলছেন।** মাদক স্পট, জুয়ার আসর, সাগরপাড়ের অবৈধ তেলের দোকান, ট্রাক-স্ট্যান্ড থেকে শুরু করে পাহাড় কাটা ও চোরাই কাঠের গাড়ি—কোনো কিছুই বাদ নেই তার নিয়ন্ত্রণ থেকে।
এক অনুসন্ধানী প্রতিবেদক ছদ্মবেশে তার সঙ্গে যোগাযোগ করলে অলি নিজেই প্রস্তাব দেন—সীতাকুণ্ড থেকে তিনটি ট্রাকে চোরাই কাঠ আনার। কথোপকথনে স্পষ্ট শোনা যায়, তিনি বলেন—
“আমি এখন আকবরশাহ থানার ক্যাশের দায়িত্বে। প্রতি গাড়ি এক হাজার টাকা, পুলিশ ধরলে আমাকে ফোন দেবেন।”
অভিযোগ আছে, এই “ক্যাশিয়ার” পদ কিনতে তিনি প্রায় আড়াই লাখ টাকা খরচ করেছেন। তবে কাকে টাকা দিয়েছেন সে বিষয়ে মুখ খোলেননি।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে ক্ষুব্ধ অলি প্রতিবেদককে হুমকি দিয়ে বলেন—
“আপনি কি আমাকে চ্যালেঞ্জ করছেন? আমি ফেডারেশনের অলি।”
এরপরই ফোন কেটে দেন।
এ বিষয়ে আকবরশাহ থানার ওসি মো. আরিফুর রহমান বলেন—
“থানায় কোনো ক্যাশিয়ার থাকার প্রশ্নই আসে না। কেউ থানার পরিচয়ে চাঁদাবাজি করলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
চট্টগ্রাম প্রতিদিন
আড়াই লাখে থানার ক্যাশিয়ার অলি: টোকাই থেকে কোটিপতির অপরাধ সাম্রাজ্য
লেখকঃ এস.কে নূরনবী
অনলাইন ডেস্ক
