রাজধানীর জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে ১৮ দিনের অচলাবস্থা শেষে অবশেষে স্বাভাবিক হয়েছে চিকিৎসাসেবা। শনিবার (১৪ জুন) সকাল থেকে হাসপাতালের সব বিভাগে পূর্ণমাত্রায় চিকিৎসা কার্যক্রম শুরু হয়।
সকালে চিকিৎসক, নার্স ও অন্যান্য স্টাফদের উপস্থিতিতে হাসপাতাল ভবনটি ফিরে পায় চিরচেনা কর্মচাঞ্চল্য। রোগী ও তাদের স্বজনদের ভিড়ও ছিল চোখে পড়ার মতো। বহির্বিভাগ, ওয়ার্ড ও জরুরি বিভাগে চিকিৎসকদের আন্তরিকভাবে রোগীদের সেবা দিতে দেখা গেছে।
হাসপাতালের একজন চিকিৎসক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, “সকাল থেকেই চিকিৎসাসেবা চালু হয়েছে। রোগীরাও আসছেন, যাদের প্রয়োজন অনুযায়ী চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। অনেককে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।”
চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউটের সহকারী অধ্যাপক ও আহতদের চিকিৎসা সমন্বয়কারী ডা. যাকিয়া সুলতানা নীলা বলেন, “সকাল থেকেই আমরা প্রতিটি বিভাগে চিকিৎসা সেবা শুরু করেছি। চিকিৎসক ও নার্সরা আগের মতোই দায়িত্ব পালন করছেন। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। আমরা বিশ্বাস করি, আর কোনো অপ্রীতিকর পরিস্থিতির পুনরাবৃত্তি হবে না। রোগী ও চিকিৎসকদের মধ্যে আস্থা ফিরিয়ে আনতেই আমাদের প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে।”
চিকিৎসা সেবা পুনরায় চালু হওয়ায় রোগীদের মাঝে স্বস্তি ফিরে এসেছে। কিশোরগঞ্জ থেকে আসা মো. কায়সার আলী বলেন, “গত সপ্তাহে এসে চিকিৎসা না পেয়ে ফিরে যেতে হয়েছিল। আজ এসে চিকিৎসা নিতে পেরেছি। খুব ভালো লাগছে।”
নোয়াখালী থেকে আসা এক রোগীর স্বজন জানান, চোখের অপারেশনের জন্য দীর্ঘদিন অপেক্ষা করেছি। এখন সব চালু হয়েছে জেনে স্বস্তি পাচ্ছি।
গত ২৮ মে ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থানে’ আহত কয়েকজনের সঙ্গে ইনস্টিটিউটের চিকিৎসক ও নার্সদের মধ্যে অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটে। এতে হাসপাতালের অন্তত ১০ জন কর্মী আহত হন বলে জানা যায়। নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কার কারণে ২৯ মে থেকে হাসপাতালের কার্যক্রম প্রায় সম্পূর্ণরূপে স্থবির হয়ে পড়ে। বহু রোগী চিকিৎসা না পেয়ে ফিরে যান, ভর্তি থাকা রোগীরাও ভোগান্তিতে পড়েন।
পরবর্তীতে আলোচনার মাধ্যমে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার উদ্যোগ নেয় কর্তৃপক্ষ। ৪ জুন আংশিকভাবে চালু করা হয় জরুরি বিভাগ এবং ১২ জুন চালু হয় বহির্বিভাগ। অবশেষে আজ ১৪ জুন থেকে হাসপাতালের সব বিভাগে চিকিৎসাসেবা পুনরায় শুরু হয়েছে।