জাতীয় নির্বাচন কবে অনুষ্ঠিত হবে তা এখনও নির্ধারণ না হলেও অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, চলতি বছরের ডিসেম্বর থেকে আগামী বছরের জুনের মধ্যবর্তী যেকোনো সময় নির্বাচন হতে পারে। তবে, ৩০ জুনের পর আর কোনো নির্বাচন হবে না।
ছাত্র ও জনসাধারণের অভ্যুত্থানের মাধ্যমে জনগণের চাহিদার প্রতিফলন হিসেবে ক্ষমতায় আসা অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সামনে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হলো একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন আয়োজন করা। তবে এই লক্ষ্যে রাজনৈতিক ঐকমত্য অর্জন কতটা বাস্তবসম্মত, তা নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে।
দেশের অন্যতম বৃহৎ রাজনৈতিক দল বিএনপি ইতোমধ্যেই জানিয়ে দিয়েছে যে, দ্রুত নির্বাচনের রোডম্যাপ প্রকাশ এবং ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠিত না হলে অন্তর্বর্তী সরকারকে সমর্থন দেওয়া কঠিন হবে। বিএনপি ও অন্যান্য দল দ্রুততম সময়ে প্রয়োজনীয় সংস্কার সম্পন্ন করে নির্বাচন আয়োজনের দাবি জানিয়ে আসছে।
দেশের বেশিরভাগ জনগণের সমর্থন বিএনপির দিকে। সাম্প্রতিক সমাবেশগুলোতে বিপুল জনসমাগম সেই ইঙ্গিত বহন করে। ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন না হলে, এই বৃহৎ জনসমর্থন হারাতে পারে অন্তর্বর্তী সরকার।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, “দশ মাস ধরে সংস্কারের কথা বলা হচ্ছে। নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় সংস্কার এক মাসের মধ্যেই করা সম্ভব। সে অনুযায়ী ডিসেম্বরের মধ্যেই নির্বাচন দেওয়া উচিত।
তিনি আরও বলেন, “গত ১৫ বছর জনগণ তাদের ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত ছিল। অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ব হলো জনগণের অধিকার ফিরিয়ে দেওয়া।”
বিএনপি মনে করে, নির্বাচনী রোডম্যাপ এবং সময়সূচি নিয়ে অনিশ্চয়তা নির্বাচনে অংশগ্রহণ বাধাগ্রস্ত করতে পারে।
সম্প্রতি ৩০টি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সংলাপে দেখা গেছে, অধিকাংশ দলই ডিসেম্বরের মধ্যেই নির্বাচন চায়। শুধুমাত্র কিছু দল পরের সময়ের পক্ষে মত দিয়েছে।
এদিকে, অধ্যাপক ইউনূসের সরকার এখনো কোনো নির্দিষ্ট রোডম্যাপ ঘোষণা করেনি। একটি স্বচ্ছ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন আয়োজনের জন্য সময়োপযোগী আইন সংস্কার ও নির্দিষ্ট পরিকল্পনার প্রয়োজন।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, আন্তর্জাতিক চাপ এবং জনগণের প্রত্যাশা অনুযায়ী সরকার যদি দ্রুত সিদ্ধান্ত না নেয়, তবে সরকারের অবস্থান দুর্বল হয়ে পড়তে পারে।