মঙ্গল গ্রহের পৃষ্ঠতলের অনুসন্ধানে বহু আগেই হিমবাহের অস্তিত্ব শনাক্ত করা হয়েছিল। বিজ্ঞানীদের মতে, লাল গ্রহটির অধিকাংশ পাহাড়ি ঢাল বরফে আবৃত, যা ধুলার আস্তরণে ঢাকা। এসব হিমবাহের ৮০ শতাংশেরও বেশি অংশ বরফ দিয়ে গঠিত। এবার সেই হিমবাহগুলোর প্রকৃত ধরন জানতে নতুন গবেষণা চালিয়েছেন বিজ্ঞানীরা। তাদের মতে, এটি ভবিষ্যতে মঙ্গলে মানব অভিযানের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ তথ্য।
এই হিমবাহগুলো ভবিষ্যতে পানির উৎস ছাড়াও অক্সিজেন উৎপাদন এবং রকেট জ্বালানির উপাদান হিসেবেও ব্যবহৃত হতে পারে। বরফ থেকে পানি সংগ্রহ অপেক্ষাকৃত কম শক্তি খরচে সম্ভব—এটি একটি বড় সুবিধা বলে মনে করছেন গবেষকরা।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অ্যারিজোনার টাকসনে অবস্থিত প্ল্যানেটারি সায়েন্স ইনস্টিটিউটের সিনিয়র বিজ্ঞানী এবং কানাডার টরন্টোর ইয়র্ক ইউনিভার্সিটির আর্থ অ্যান্ড স্পেস সায়েন্স বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আইজ্যাক স্মিথ জানান, মঙ্গলের হিমবাহগুলোতে অভিন্নতা লক্ষ করা গেছে। এটি ইঙ্গিত দেয় যে, এক সময় গ্রহটিতে একটি বড় হিমবাহ বিস্তৃত ছিল।
গবেষণা অনুযায়ী, বরফের এই হিমবাহগুলো মঙ্গলের পৃষ্ঠে ধ্বংসাবশেষের পাতলা স্তরের নিচে রক্ষিত রয়েছে, যা কঠিন পরিবেশ থেকে সেগুলোকে সুরক্ষা দিয়েছে। বিজ্ঞানীরা নাসার মার্স রিকনেসাঁ অরবিটারের SHARAD নামের যন্ত্র ব্যবহার করে রাডার তরঙ্গের মাধ্যমে বরফের অনুপাত নির্ধারণ করেছেন।
ইসরায়েলের ওয়েইজম্যান ইনস্টিটিউট অব সায়েন্সের গ্রহবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ওডেড আহারনসন বলেন, “আমরা হিমবাহগুলোর বিশুদ্ধতায় অবাক করা এক ধারাবাহিকতা দেখেছি। যেসব জায়গা পর্যবেক্ষণ করা হয়েছে, সেখানে বরফের ঘনত্ব অনেক বেশি, প্রায় ৮০ শতাংশ বা তারও বেশি। এই বরফের স্তরের ওপর রয়েছে পাথর ও ধুলার আস্তরণ। ভবিষ্যতে এসব হিমবাহ মানবজাতির জন্য গুরুত্বপূর্ণ সম্পদে পরিণত হতে পারে।”
তিনি আরও বলেন, এসব হিমবাহ হয়তো বৃষ্টিপাত, তুষার অথবা সরাসরি ঘনীভবনের মাধ্যমে তৈরি হতে পারে।
সূত্র: এনডিটিভি : আজকের খবর/এ. আই. এ.