টাকার অভাবে আর কেউ চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত হবেন না বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সদস্যসচিব ডা. তাসনিম জারা। তিনি বলেন, আমরা এমন একটি স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থা গড়ে তুলতে চাই, যেখানে চিকিৎসা আর বিলাসিতা নয়, বরং প্রতিটি নাগরিকের মৌলিক অধিকার হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হবে।
রোববার (৩ আগস্ট) বিকেলে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে এনসিপির উদ্যোগে আয়োজিত এক জনসভায় তিনি এসব কথা বলেন।
ডা. তাসনিম বলেন, স্বাস্থ্যসেবার প্রতিটি স্তরে বৈষম্য বিদ্যমান—এই বাস্তবতা আমরা জানি। সেই বৈষম্য দূর করে আমরা এমন একটি জরুরি চিকিৎসা সেবা চালু করব, যেখানে অ্যাম্বুলেন্সেই প্রাথমিক চিকিৎসা শুরু হবে। প্রতিটি নাগরিকের স্বাস্থ্যতথ্য ডিজিটাল পদ্ধতিতে সংরক্ষণের ব্যবস্থা নেওয়া হবে, যাতে অপ্রয়োজনীয় পরীক্ষা হ্রাস পায় এবং ভুল চিকিৎসার ঝুঁকি কমে।
তিনি আরও বলেন, প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা জোরদার করা হবে। আমরা চাই, প্রতিটি অঞ্চলে, প্রতিটি পাড়ায়, মানসম্মত স্বাস্থ্যসেবা নাগরিকের দোরগোড়ায় পৌঁছে যাক। একই সঙ্গে মানসিক স্বাস্থ্যসেবার পরিধিও বাড়ানো হবে। পাশাপাশি হৃদরোগ, ট্রমা ও অন্যান্য বিশেষায়িত চিকিৎসার জন্য অঞ্চলভিত্তিক উন্নত চিকিৎসাকেন্দ্র স্থাপন করব।
স্বাস্থ্যসেবার পাশাপাশি অর্থনৈতিক পরিকল্পনার কথাও তুলে ধরেন তাসনিম জারা। তিনি বলেন, আমরা এমন কল্যাণমুখী অর্থনীতি গড়ে তুলতে চাই, যেখানে শুধু চাকরি নয়—নাগরিক মর্যাদা বজায় রেখে সম্মানজনক কর্মসংস্থান নিশ্চিত হবে। এমন কর্মসংস্থান চাই, যা শুধু বেঁচে থাকার উপায় নয়, বরং উন্নত জীবনের পথ তৈরি করে। কর কাঠামো পুনর্বিন্যাসের মাধ্যমে ধনী-গরিবের বৈষম্য কমিয়ে আনা হবে।
রাজনীতিতে তরুণদের অংশগ্রহণ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমরা দেশের প্রতিটি জেলায় ঘুরে দেখেছি—তরুণদের মধ্যে কতটা উদ্দীপনা ও আশাবাদ কাজ করছে। কিন্তু আমরা দেখতে পাচ্ছি, এই তরুণদের অনেক সময় অবমূল্যায়ন করা হয়—তাদের ক্ষমতায়নে বাধা সৃষ্টি হয়। অথচ ঠাকুরগাঁওয়ের লামিন বা সিরাজগঞ্জের যুবাইদার মতো অনেক তরুণ-তরুণী স্বপ্ন নিয়ে রাজপথে নেমেছেন। আজ দেশের রাজনীতিতে এক প্রজন্মগত পরিবর্তন এসেছে। সেই স্বপ্ন আর রাজনৈতিক সচেতনতাকে লালন করতে হবে।
তিনি হুঁশিয়ার করে বলেন, তরুণদের স্বপ্ন ধ্বংস করা যাবে না। তা হলে দেশ আবারও গভীর সংকটে পড়বে। বরং তরুণদের স্বপ্নে গড়ে উঠুক নতুন বাংলাদেশ।
নারীর সক্রিয় অংশগ্রহণ এবং প্রবাসীদের ভোটাধিকারের প্রসঙ্গ তুলে ধরে তাসনিম জারা বলেন, “আমরা এমন একটি রাজনীতি চাই, যেখানে নারী-পুরুষ নির্বিশেষে সকলে মতপ্রকাশ এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণে অংশ নিতে পারেন। প্রবাসে থাকা আমাদের ভাইয়েরা দেশের গঠনে ভূমিকা রাখতে চান—আমরা তাদের ভোটাধিকার নিশ্চিত করব। সব নাগরিকের অধিকার ও সম্মান রক্ষা করাই হবে আমাদের রাজনীতির মূল লক্ষ্য।