মিয়ানমারের সামরিক সরকার বছরের শেষ দিকে প্রতিশ্রুত নির্বাচনকে সামনে রেখে কঠোর একটি নতুন নির্বাচনী আইন প্রণয়ন করেছে, যাতে নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় বিরোধিতা বা বিঘ্ন ঘটালে মৃত্যুদণ্ড পর্যন্ত শাস্তি নির্ধারণ করা হয়েছে।
বুধবার রাষ্ট্রীয় দৈনিক Myanma Alinn পত্রিকায় আইনটি প্রকাশিত হয়। ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে অং সান সু চি'র নির্বাচিত সরকারকে হটিয়ে সেনাবাহিনী ক্ষমতা দখল করার পর যে অস্থিরতা শুরু হয়েছিল, তা এখনো চলছে।
সেনাবাহিনী ২০২০ সালের নির্বাচনে ব্যাপক জালিয়াতির অভিযোগ তুলে ক্ষমতা দখলের পক্ষে যুক্তি দেয়, যদিও আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকরা তেমন কোনো অনিয়ম পাননি। শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ দমন করার পর অনেকেই অস্ত্র হাতে তুলে নেন এবং দেশের বিভিন্ন অংশে এখন সশস্ত্র সংঘর্ষ চলছে।
সেনাপ্রধান মিন অং হ্লাইং স্বাক্ষরিত নতুন আইন অনুযায়ী, কেউ যদি বক্তৃতা, সংগঠন, প্রতিবাদ, চিঠিপত্র বিতরণ ইত্যাদির মাধ্যমে নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় বিঘ্ন ঘটায়, তাহলে তাকে ৩ থেকে ১০ বছর কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ডে দণ্ডিত করা যাবে।
নির্বাচন কমিশন, প্রার্থী বা ভোটারদের হুমকি, বাধা, নির্যাতন বা গুরুতর ক্ষতি করলে ৩ বছর থেকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড, এমনকি মৃত্যুদণ্ডও হতে পারে যদি এতে কেউ নিহত হয়।
নির্বাচনের সময় নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে দেশি ও বিদেশি সংস্থাগুলোর কার্যক্রম নজরদারির জন্য কমিটি গঠনের কথাও বলা হয়েছে।
তবে সমালোচকদের মতে, এই নির্বাচন কখনোই অবাধ ও সুষ্ঠু হতে পারে না, কারণ দেশজুড়ে স্বাধীন গণমাধ্যম নেই এবং অং সান সু চির ন্যাশনাল লীগ ফর ডেমোক্রেসি দলের অধিকাংশ নেতাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
বর্তমানে সামরিক বাহিনী দেশের অর্ধেকেরও কম এলাকার নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। জুনে সেনা-নিয়োজিত নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে, নিরাপত্তা পরিস্থিতি বিবেচনায় ৩৩০টি টাউনশিপের মধ্যে ২৬৭টিতে নির্বাচন আয়োজনের পরিকল্পনা রয়েছে।
জাতীয় ঐক্য সরকার (National Unity Government) ও বিভিন্ন জাতিগত সশস্ত্র গোষ্ঠী নির্বাচনের বিরোধিতা করছে। করেন ন্যাশনাল ইউনিয়নের মুখপাত্র পদোহ সাও তাও নিঃ বলেন, এটি একটি "অবৈধ ও প্রহসনমূলক" নির্বাচন এবং তারা নিজেদের পদ্ধতিতে এই নির্বাচন প্রতিরোধ করবে।
আজকের খবর/ এম. এস. এইচ.