চা আমাদের দৈনন্দিন জীবনের অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ। শরীরের ক্লান্তি দূর করতে বা কাজের ফাঁকে একটু সতেজ হতে চায়ের কাপে চুমুক দেন অনেকেই। আড্ডা আর তর্ক বিতর্কের মাঝে চা খেতে সবাই পছন্দ করেন। তবে কোনো জিনিসেরই অতিরিক্ত ভালো কিছু বয়ে আনে না।
তেমনি অতিরিক্ত চা খাওয়াও ক্ষতির কারণ হতে পারে।
অতিরিক্ত চা খাওয়া শরীরের কী ক্ষতি আনতে পারে, তা জানুন এই প্রতিবেদনে—
ঘুমের ব্যাঘাত ঘটায়
চায়ের অন্যতম প্রধান উপাদান ক্যাফেইন। পরিমিত মাত্রায় এটি মস্তিষ্ককে সজাগ রাখতে সাহায্য করলেও, অতিরিক্ত মাত্রায় শরীরে প্রবেশ করলে ঘুমের স্বাভাবিক চক্র ব্যাহত হয়। বিশেষ করে সন্ধ্যার পর বা রাতে চা পান করলে ঘুমের ব্যাঘাত ঘটার সম্ভাবনা দেখা দেয়।
এ ছাড়া দীর্ঘমেয়াদি অনিদ্রা, মনোযোগের অভাব, খিটখিটে মেজাজ এবং অন্যান্য শারীরিক অসুস্থতা সৃষ্টি হতে পারে।
১০ মিনিটে তৈরি করুন সুস্বাদু আমের পুডিং
অম্বল ও হজমের গোলযোগ
অতিরিক্ত চা পানের ফলে অম্বল বা বুকজ্বালার সমস্যা দেখা দিতে পারে। এটি পাকস্থলিতে এসিডের ক্ষরণ বৃদ্ধি করে। ফলে এসিডিটি, গ্যাস ও বদহজমের মতো সমস্যা দেখা দেয়।
খালি পেটে চা পানের অভ্যাস এই সমস্যা আরো বাড়িয়ে তোলে। দীর্ঘদিন ধরে এমন অবস্থা চলতে থাকলে গ্যাস্ট্রিক আলসারের ঝুঁকিও বেড়ে যায়। বিশেষ করে যারা দুধ চা পান করেন তাদের ঝুঁকি আরো বেশি।
শরীরে লৌহ শোষণে বাধা
চায়ের মধ্যে থাকা ট্যানিন নামক উপাদান খাদ্য থেকে লৌহ বা আয়রন শোষণের প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করে। ফলে নিয়মিত অতিরিক্ত চা পান করলে শরীরে আয়রনের ঘাটতি দেখা দিতে পারে।
এর ফলে শরীরে রক্তাল্পতা বা অ্যানিমিয়ার মতো রোগ হতে পারে। এই রোগ হলে শরীর দুর্বল হয়ে পড়া, মাথা ঘোরা ও শ্বাসকষ্টের মতো লক্ষণ দেখা দেয়।
আরো পড়ুন
থাইরয়েড থেকে হতে পারে ক্যান্সারও, সুস্থ থাকতে জেনে নিন
অস্থিরতা ও উদ্বেগ বৃদ্ধি
চা সেবনে স্নায়ুতন্ত্র অতিমাত্রায় উত্তেজিত হয়ে পড়ে। এর ফলে মানসিক উদ্বেগ, অস্থিরতা, বুক ধড়ফড়ানি, এমনকি হৃৎস্পন্দন অনিয়মিত হওয়ার মতো সমস্যাও দেখা দিতে পারে। যারা ইতোমধ্যেই অ্যাংজাইটি বা প্যানিক ডিসঅর্ডারে ভুগছেন, তাদের ক্ষেত্রে অতিরিক্ত চা পান পরিস্থিতি আরো জটিল করে তুলতে পারে।
মোট কথা, চা পানের অভ্যাস ত্যাগ করার প্রয়োজন না থাকলেও, এর পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে রাখা জরুরি। দিনে ২-৩ কাপের বেশি চা পান না করাই ভালো। পাশাপাশি, নিজের শরীরের প্রতি নজর রেখে কোনো রকম অস্বস্তি দেখা দিলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। স্বাস্থ্যকর জীবনযাপনের জন্য খাদ্যাভ্যাসে পরিমিতিবোধ বজায় রাখা গুরুত্বপূর্ণ।