সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার বিখ্যাত পর্যটন স্পট ভোলাগঞ্জের সাদাপাথর এলাকায় সাম্প্রতিক সময়ে ভয়াবহ ও নজিরবিহীন পাথর লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে। অবাধ ও বেপরোয়া এই লুটপাটের ফলে সাদা পাথর প্রাচীন পর্যটনকেন্দ্রটি প্রায় সম্পূর্ণরূপে পাথরশূন্য হয়ে পড়েছে। ঘটনাটি সামনে আসার পর জেলা প্রশাসন দ্রুত ব্যবস্থা নিয়েছে এবং একজন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসককে প্রধান করে তদন্ত কমিটি গঠন করেছে।
সোমবার থেকে চলা এই ঘটনার বিষয়ে মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) সন্ধ্যায় সিলেট জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শের মাহবুব মুরাদ সাংবাদিকদের নিশ্চিত করেন, “সংবাদে প্রকাশিত হওয়া তথ্যের পর আমরা তৎক্ষণাৎ তদন্ত কমিটি গঠন করেছি। বিষয়টি নিয়ে একটি সভাও আহ্বান করেছি এবং ইতিমধ্যে টাস্কফোর্সের অভিযান শুরু হয়েছে। আগামী দিনগুলোতেও আমাদের অভিযান অব্যাহত থাকবে।”
জেলা প্রশাসক আরও জানান, “সাদা পাথর ও জাফলংসহ সিলেটের বিভিন্ন পর্যটন স্পটে বালু-পাথর উত্তোলনের ব্যাপারে আগামীকাল (১৩ আগস্ট) জরুরি সমন্বয় সভা ডাকানো হয়েছে, যেখানে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে এবং সমস্যা সমাধানের জন্য কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।”
উল্লেখ্য, গত বছরের ৫ আগস্ট সাদাপাথর এলাকায় গণ-অভ্যুত্থানের পর থেকে পাথর উত্তোলন কার্যক্রম অবাধে চলছিল। তবে সাম্প্রতিক সময়ে পাথরের বেপরোয়া চুরি ও লুটপাটের মাত্রা বেড়ে যাওয়ায় সাদা পাথর পর্যটনকেন্দ্রটির সৌন্দর্য অনেকটাই নষ্ট হয়েছে। বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও গণমাধ্যমে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ার পর নানা মহলে ক্ষোভ ও নিন্দার ঝড় বয়ে যায়।
আরও একটি বিশেষ ঘটনা হলো, এই পরিস্থিতিতে গত সোমবার রাতে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সভাপতি সাহাব উদ্দিনের সকল পদ স্থগিত করেছে দলীয় কর্তৃপক্ষ। পদত্যাগের কারণ হিসেবে তার বিরুদ্ধে অভিযোগগুলো তুলে ধরা হয়েছে।
সাদাপাথর ও ভোলাগঞ্জ পর্যটন স্পটের রক্ষা ও সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার জন্য জেলা প্রশাসন ও সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোর এই উদ্যোগ স্থানীয়দের মধ্যে প্রশংসা পাচ্ছে, তবে এ বিষয়ে যথাযথ তদন্ত ও কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণই স্থানীয় পর্যায়ে সমস্যা দূর করার একমাত্র উপায় বলে মনে করা হচ্ছে।