গণ অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান বলেছেন, জনমানুষের প্রত্যাশা পূরণে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টারা পুরোপুরি দক্ষ নন এবং আগামী চার মাসে তাদের কাছে বেশি চাহিদাও নেই। বৃহস্পতিবার নিজ ফেসবুক পেজে দেওয়া এক পোস্টে তিনি এসব মন্তব্য করেন ও আন্দোলনের পর সরকারের প্রতিশ্রুতিগুলো ঝাড়াও করেন।
রাশেদ খান লিখেছেন, গণ-অভ্যুত্থানের পর জনগণের প্রত্যাশা ছিল, অন্তর্বর্তী সরকার আদালত-বহির্ভূত দুর্নীতি রোধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করবে, দুর্নীতিবাজ সরকারি কর্মকর্তাদের গ্রেফতার করে জেলা জেলে পাঠাবে এবং দুর্নীতির মাধ্যমে অর্জিত অবৈধ সম্পদ রাষ্ট্রীয় কোষাগারে বাজেয়াপ্ত করবে। কিন্তু বাস্তবে অনেক ক্ষেত্রেই বিষয়গুলো হয়নি; বরং কিছু ক্ষেত্রে অভিযোগ আছে যে নির্দিষ্ট ব্যক্তিদের পক্ষে সুরক্ষা ও পুনর্বাসন করা হয়েছে।
তিনি বলেন, সমাজে অনাচার ও অবিচার রোধে জিরো টলারেন্স নীতি জোরদার করার প্রত্যাশাও ছিল—মাদক ব্যবসায়ী, চোর-ডাকাত, চাঁদাবাজ, মাস্তান, কিশোর গ্যাং, নারী নিপীড়ক ও জবরদখলদারদের বিরুদ্ধে বিশেষ অভিযান চালানো হবে। তবু এ ধরনের কার্যকর পদক্ষেপ দেখা যায়নি।
রাশেদ খান আরও উল্লেখ করেন, সরকারের কর্তারা স্বচ্ছতাকে উদ্দীপনা দিতে প্রতি তিন বা ছয় মাসে উপদেষ্টা ও আমলাদের সম্পদের বিবরণ ওয়েবসাইটে বা জনগণের কাছে প্রকাশ করবে বলে বাগদত্ত করেছিলেন এবং ব্যবসায়ী ও রাজনীতিবিদদের সম্পদ হিসাব জমা দেওয়ায় বাধ্য করা হবে। প্রদত্ত হিসাব ও দুদকের পাওয়া তথ্যে যে কোনো অমিল ধরা পড়লে কঠোর শাস্তি হবে—তবে এসব ঘোষণার বদলে এখনো দৃশ্যমান কোন ফলাফল নেই।
তিনি বিচারসেবা ও চিকিৎসাখাতের অবনতি উঠে আসে বলেও মন্তব্য করে বলেন, এই দুটি খাতের দিকে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া ছিল; কিন্তু তা না করে তুচ্ছ ও অপ্রয়োজনীয় কর্মকাণ্ডে সময় খরচ হচ্ছে।
রাশেদ খান যোগ করেন, অন্তর্বর্তী সরকার আইনের শাসন, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা প্রতিষ্ঠায় তুলনামূলকভাবে ব্যর্থ প্রমাণিত হয়েছে। তাই বাকি চার মাসে তারাই বড় আশা করাও যৌক্তিক নয়—উপদেষ্টাগণের সম্পূর্ণ যোগ্যতা জনগণের প্রত্যাশা পূরণে যথেষ্ট নয়; যতটুকু করেছেন তাতেই সীমিত সন্তুষ্টি মেনে নিতে হবে।
তিনি বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে ঐতিহাসিকভাবে জবাবদিহিতা থাকবে। যদি রাষ্ট্রীয় পরিবর্তন মূলত না হয়, তাহলে ভবিষ্যতে আবারও গণ-অভ্যুত্থানের পথ খোলা থাকবে; তাই ইতিহাস তাদের বিচার করবে।
