রাজধানীতে দুপুর থেকে থেমে থেমে বৃষ্টি হলেও বিকেলে নেমে আসে মুষলধারে। তবে আবহাওয়ার বৈরিতা উপেক্ষা করে রাজধানীর মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থান দিবস’-এর অনুষ্ঠানে ভিড় করে সাধারণ মানুষ। যেন বৃষ্টির ভেতরেই ফুটে ওঠে ফ্যাসিস্ট বিরোধী বিজয়ের আরেক রূপ।
মঙ্গলবার (৫ আগস্ট) সকাল থেকেই আয়োজন করা হয় সাংস্কৃতিক পরিবেশনা, গান, কবিতা ও নাটকসহ দিনব্যাপী উৎসবের। ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থান দিবস’ উপলক্ষে এই আয়োজন নানা শ্রেণি-পেশার মানুষের পদচারণায় পরিণত হয় উৎসবের মঞ্চে।
২০২৪ সালের এই দিনে ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের প্রধান শেখ হাসিনা ও তাঁর ঘনিষ্ঠ সহযোগীরা ছাত্র-জনতার প্রতিরোধে দেশত্যাগে বাধ্য হন। সেই ঐতিহাসিক ঘটনার বর্ষপূর্তিতে আয়োজিত এই আয়োজন যেন প্রতিরোধের চেতনাকে নতুন করে জাগিয়ে তোলে।
সাভারের হেমায়েতপুর থেকে ছেলেকে সঙ্গে নিয়ে আসেন আবদুল আল মামুন। তিনি বলেন, “জুলাই আন্দোলনের এক বছর পূর্তি উপলক্ষে এই বিজয়ের দিনটিকে সন্তানের সঙ্গে ভাগাভাগি করতে এসেছি। যাতে এই আন্দোলনের চেতনা সে ধারণ করতে পারে।
উত্তরা থেকে এসে বৃষ্টিভেজা শরীরে দাঁড়িয়ে থাকা রফিকুল ইসলাম জানান, জুলাই অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে যে ঘোষণাপত্র পাঠ করা হবে, তা যেন জনকল্যাণমুখী হয়—এই প্রত্যাশা নিয়েই এসেছি।
তিনি আরও বলেন, এই ফ্যাসিস্ট শাসনের বিরুদ্ধে যারা রক্ত দিয়েছিল, তাদের আত্মত্যাগ যেন সার্থক হয় একটি জনবান্ধব রাষ্ট্র গঠনের মধ্য দিয়ে।
অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে ‘জুলাই যোদ্ধা’ সিরাজুল ইসলাম বলেন, “আমি গত বছরের ২৯ জুলাই বাড্ডায় আন্দোলন করতে গিয়ে পুলিশের গুলিতে আহত হই এবং গ্রেপ্তার হই। আজ আমাকে একজন ‘জুলাই যোদ্ধা’ হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে। তাই পরিবারসহ এখানে এসেছি, ভালো লাগছে মানুষের এমন স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ দেখে।
অনুষ্ঠনে উপস্থিত এক সংবাদকর্মী বলেন, “আজকের দিনটি ঐতিহাসিক। এই দিনে ফ্যাসিস্ট সরকার পতন হয়েছে। আজকের দিনটি নতুন বাংলাদেশের পথে এক গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক।
শেষ পর্যন্ত বৃষ্টি থামেনি, তবে মানুষের উপস্থিতিও থামেনি। বরং সেই বৃষ্টিকে সঙ্গী করেই হাজার হাজার মানুষের অংশগ্রহণ ফ্যাসিস্ট পতনের প্রতিচ্ছবি হয়ে উঠে এসেছে জনতার মিলনমেলায়।