আজ ৫ আগস্ট, ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থান দিবস’। ২০২৪ সালের এই দিনে স্বৈরশাসনবিরোধী আন্দোলনে শহীদ হন অনেকে। এই শহীদদের স্মরণে সরকারিভাবে দিনটিকে বিশেষ মর্যাদায় পালন করা হয় এবং সরকারি নির্দেশনায় দেশের সকল গার্মেন্টস ও টেক্সটাইল মিল বন্ধ রাখার আদেশ জারি করা হয়।
কিন্তু সেই নির্দেশনা অমান্য করে চট্টগ্রামের অন্যতম বৃহৎ শিল্প প্রতিষ্ঠান **ইস্পাহানি টেক্সটাইল মিল** আজও খোলা রয়েছে। শ্রমিকদের অভিযোগ, ছুটি ঘোষণার বিষয়টি কর্তৃপক্ষকে একাধিকবার জানানো হলেও তারা কোনো কর্ণপাত করেনি। বরং ফ্যাসিবাদী মানসিকতা নিয়ে কাজ চালিয়ে যাওয়ার জন্য চাপ সৃষ্টি করেছে।
এক শ্রমিক গণমাধ্যমকে বলেন,
আমরা সকাল থেকেই বলেছি যে আজ সরকারি ছুটি। শহীদদের স্মরণে মিল বন্ধ রাখা উচিত। কিন্তু কর্তৃপক্ষ আমাদের কথা কানে তোলে না। আমাদের জোর করে কাজে ডাকা হয়েছে।
শুধু তাই নয়, বিষয়টি গণমাধ্যমে প্রকাশ পাওয়ার পর সংবাদকর্মীরা যখন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করতে চান, তখনো তারা কোনো সদুত্তর না দিয়ে নির্লিপ্ত ভঙ্গিতে বিষয়টি এড়িয়ে যান। এক সাংবাদিক ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন,
এটি শুধু সরকারি আদেশ অমান্য নয়, এটি ইতিহাস ও শহীদের প্রতি চরম অবমাননা। অথচ কর্তৃপক্ষ আমাদের প্রশ্নের জবাব দিতে পর্যন্ত রাজি হয়নি।
স্থানীয় শ্রমিক সংগঠনগুলো বলছে, এই ঘটনার মাধ্যমে স্পষ্ট হয়েছে—দেশের কিছু বড় শিল্প প্রতিষ্ঠান এখনো সরকারি আইন ও নির্দেশনার তোয়াক্কা করে না। শ্রমিকদের মৌলিক অধিকার, এমনকি জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ দিবসের সম্মানও তাদের কাছে গৌণ।
এক সংগঠক বলেন,
এটি নিছক একদিনের ঘটনা নয়। ইস্পাহানি টেক্সটাইল মিলের মতো প্রতিষ্ঠানের এই ঔদ্ধত্য আগামী ২০২৪-এর আন্দোলনের আগুনে ঘি ঢালবে। জনগণের স্বার্থবিরোধী, ফ্যাসিবাদী ও কর্পোরেট মানসিকতার বিরুদ্ধে আমাদের এই আন্দোলন আরও তীব্র হবে।
এ ঘটনার জেরে চট্টগ্রামে শ্রমিকদের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভ ও উত্তেজনা তৈরি হয়েছে। কেউ কেউ এর প্রতিবাদে কর্মবিরতির ডাক দেওয়ার কথাও ভাবছেন।
সরকারের শ্রম মন্ত্রণালয় কিংবা স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত এ বিষয়ে কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।
জনগণ ও শ্রমিক সমাজ মনে করছেন, এই ঘটনার যথাযথ তদন্ত ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি না হলে ভবিষ্যতে সরকারি নির্দেশনা শুধু কাগজে-কলমেই সীমাবদ্ধ থাকবে। আর ‘২০২৪-এর আন্দোলন’ শুধু রাজনৈতিক পরিসরে নয়, শিল্পখাতেও একটি বড় ধাক্কা এনে দিতে পারে।