আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরকে সীমান্ত পেরিয়ে পালাতে সহায়তা করেছেন—এমন বিতর্কিত মন্তব্যের জেরে যশোর যুবদলের বহিষ্কৃত এক নেতাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)। শুক্রবার রাত আটটার দিকে রাজধানীর খিলক্ষেত থানার তালেরটেকের দক্ষিণ নামাপাড়া এলাকা থেকে তাকে আটক করা হয়।
আটক ব্যক্তির নাম ইস্কান্দার আলী জনি (৪২)। তিনি যশোর সদর উপজেলার বালিয়াডাঙ্গা বাবলাতলা এলাকার বাসিন্দা এবং মৃত শেখ সিরাজুল ইসলামের ছেলে। জনি যশোর জেলা যুবদলের বহিষ্কৃত প্রচার সম্পাদক ছিলেন। তাঁর বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি ও তথ্যপ্রযুক্তি আইনে একাধিক মামলা রয়েছে। সর্বশেষ তিনি ঢাকার খিলক্ষেত এলাকায় ভাড়া বাসায় আত্মগোপনে ছিলেন বলে জানান যশোর ডিবির ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনজুরুল হক ভূঁইয়া।
যশোর জেলা পুলিশের মিডিয়া সেলের তথ্যমতে, জেলা যুবদলের দপ্তর সম্পাদক কামরুল ইসলামের কাছে ৫০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন জনি। এছাড়া বিএনপি ও তার অঙ্গসংগঠনের নেতাদের নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অপপ্রচার, মানহানিকর বক্তব্য এবং ভয়ভীতি প্রদর্শন করে আসছিলেন তিনি।
মিডিয়া সেলের পক্ষ থেকে আরও বলা হয়, সামাজিক মাধ্যমে লাইভে এসে জনি দাবি করেন—যশোর সেনানিবাসে অবস্থানকালে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরকে ভারতে পালাতে সহায়তা করেছিলেন তৎকালীন যুবদল নেতা ও বর্তমান সদস্যসচিব আনসারুল হক। সেনাবাহিনী ও রাষ্ট্রের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার উদ্দেশ্যে এ ধরনের উদ্দেশ্যপ্রণোদিত গুজব ছড়ানোর অভিযোগে তার বিরুদ্ধে সাইবার নিরাপত্তা আইনে একাধিক মামলা হয় যশোর কোতোয়ালি থানায়। মামলা দায়েরের পর থেকে তিনি আত্মগোপনে ছিলেন এবং সামাজিক মাধ্যমে দলের কেন্দ্রীয় নেতাদের বিরুদ্ধেও নানামুখী মন্তব্য করে আসছিলেন।
ডিবি জানায়, প্রযুক্তির সহায়তায় শুক্রবার রাতে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। শনিবার সকালে জনিকে আদালতে পাঠানো হবে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
দলীয় সূত্রে জানা যায়, যুবদলের দায়িত্বে থাকাকালেই ইস্কান্দার আলী বিভিন্ন সময় কেন্দ্রীয় নেতাদের নিয়ে নেতিবাচক মন্তব্য করতেন। শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগে তাঁকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়। চলতি বছরের ৮ জানুয়ারি ফেসবুকে দেওয়া এক স্ট্যাটাসে তিনি দাবি করেন—যশোরের যুবদল নেতারা ওবায়দুল কাদের এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার চাচাতো ভাই শেখ হেলালের পরিবারের ভারতে পালিয়ে যেতে সহায়তা করেছেন। পরে তিনি লাইভেও এ অভিযোগ পুনরায় উত্থাপন করেন, যা ঘিরে রাজনৈতিক অঙ্গনে আলোচনার ঝড় ওঠে। তবে যশোর জেলা বিএনপি ও যুবদলের শীর্ষ নেতারা এসব অভিযোগকে ভিত্তিহীন বলে প্রত্যাখ্যান করেন।