অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের মধ্যকার বৈঠক সম্পন্ন হয়েছে। প্রায় ১ ঘণ্টা ৩৫ মিনিট স্থায়ী এই বৈঠক নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
শুক্রবার (১৩ জুন) বিকেলে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়ের সময় তিনি এ প্রতিক্রিয়া জানান।
মির্জা ফখরুল বলেন, “আজ লন্ডনে অনুষ্ঠিত দুই নেতার মধ্যে বৈঠকটি অত্যন্ত সফল ও ফলপ্রসূ হয়েছে। বৈঠকে ড. ইউনূস ও তারেক রহমান জাতিকে সামনে এগিয়ে নেওয়ার দৃষ্টিভঙ্গি উপস্থাপন করেছেন।”
তিনি আরও বলেন, “জাতি দীর্ঘদিন ধরে এই বৈঠকের প্রতীক্ষায় ছিল। এটি একটি মোড় ঘুরিয়ে দেওয়া ঘটনা। নির্বাচনের প্রসঙ্গে তারেক রহমান কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রস্তাব উত্থাপন করেছেন। ড. ইউনূস দায়িত্বশীল ও দূরদর্শিতার পরিচয় দিয়েছেন। এই সংলাপ প্রমাণ করেছে—সংকটকালেও ঐক্য সম্ভব।”
বিএনপি মহাসচিব আরও বলেন, “এখন সময় এসেছে পুরনো বিভেদ ভুলে একটি জাতীয় ঐক্য গড়ে তোলার। আমরা শান্তিপূর্ণ ও গণতান্ত্রিক পথে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছি। গণতন্ত্র চর্চার মাধ্যমেই এগিয়ে যেতে হবে, পারস্পরিক কটূক্তি নয় বরং ঐক্যের ভিত্তিতে দেশকে এগিয়ে নিতে হবে।”
তিনি বলেন, “গত ১৫ বছরে দেশে ফ্যাসিবাদী শাসনব্যবস্থা রাষ্ট্রের কাঠামো ধ্বংস করে দিয়েছে। এখন গণতান্ত্রিক উপায়ে এই কাঠামো পুনর্গঠন করতে হবে।”
জুলাই-আগস্টের শহীদদের স্মরণ করে মির্জা ফখরুল বলেন, “আমাদের বীর শহীদরা ফ্যাসিস্ট শক্তিকে প্রতিহত করে পিছু হটতে বাধ্য করেছে।”
স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে শহীদদের প্রতি তারেক রহমানের শ্রদ্ধা জানানো প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “তারেক রহমান দেশের জনগণের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন, নেতাকর্মীদের অভিনন্দন জানিয়েছেন। একই সঙ্গে তিনি তার মা বেগম খালেদা জিয়াকে কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন সঠিক দিকনির্দেশনার জন্য।”
এর আগে, শুক্রবার (১৩ জুন) লন্ডনের হোটেল ডোরচেস্টারে বাংলাদেশ সময় দুপুর ২টায় শুরু হয়ে সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে এই বৈঠক শেষ হয় বিকেল ৩টা ৩৫ মিনিটে।
জানা যায়, ১ ঘণ্টা ৩৫ মিনিটের এই বৈঠকে নানামুখী বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়। বৈঠক শেষে তারেক রহমান হোটেল ত্যাগ করেন। যাওয়ার আগে তিনি ড. ইউনূসকে দুটি বই ও একটি কলম উপহার দেন।
বৈঠকের সময় ড. ইউনূস উপহারগুলো আনন্দের সঙ্গে গ্রহণ করেন এবং তারেক রহমানকে ধন্যবাদ জানান।