নওগাঁর মান্দা উপজেলার চকউলী বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয় অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ নজরুল ইসলাম গত ১১ মাস ধরে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অনুপস্থিত রয়েছেন। তবুও তিনি নিয়মিতভাবে বেতন ও ভাতা গ্রহণ করছেন বলে জানা গেছে। এ ঘটনায় শিক্ষক, কর্মচারী ও স্থানীয়দের মাঝে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে।
তথ্য অনুসারে, ২০২৪ সালের ৫ আগস্টের পর থেকে অধ্যক্ষ নজরুল ইসলাম কলেজে আর আসেননি। ২০০২ সালের ১ আগস্ট থেকে দায়িত্ব পালন করা এই অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে একাধিপত্য বিস্তার, ক্ষমতার অপব্যবহার, নিয়োগে দুর্নীতি, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের সঙ্গে অশোভন আচরণসহ একাধিক অভিযোগ রয়েছে।
পরিস্থিতি চরমে পৌঁছালে শিক্ষক, কর্মচারী, শিক্ষার্থী এবং স্থানীয়রা তার পদত্যাগের দাবিতে মানববন্ধন ও ঝাড়ু মিছিলসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করেন। তবে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশ অনুযায়ী কাউকে জোর করে পদত্যাগে বাধ্য করা যাবে না—এ কারণে অধ্যক্ষ নজরুল ইসলাম দীর্ঘ ১১ মাস কলেজে না এলেও তার পদে বহাল আছেন।
কলেজ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, অনুপস্থিতির কারণ জানতে অধ্যক্ষকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে। তবুও তিনি ইএফটি (ইলেকট্রনিক ফান্ড ট্রান্সফার) পদ্ধতিতে নিয়মিতভাবে বেতন ও ভাতা উত্তোলন করছেন।
প্রতিষ্ঠানটির একাধিক শিক্ষক নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, অধ্যক্ষ দীর্ঘদিন ধরে কর্মস্থলে না থাকলেও তার বেতন বন্ধ হয়নি। তারা ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত দাবি করেন।
এ বিষয়ে অধ্যক্ষ নজরুল ইসলাম বলেন, তিনি একটি ষড়যন্ত্রের শিকার। ৫ আগস্টের ছাত্র আন্দোলনের পর একটি গোষ্ঠী তার বিরুদ্ধে নানা কর্মসূচি চালায়। তিনি তাদের অন্যায় দাবিতে সম্মতি না দেওয়ায় কলেজে যাতায়াত কঠিন হয়ে পড়ে। এছাড়া সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হয়ে তিনি বর্তমানে রাজশাহীতে অবস্থান করছেন এবং ছুটিতে রয়েছেন। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের বিধান অনুযায়ী তিনি ইএফটির মাধ্যমে বেতন নিচ্ছেন।
এ বিষয়ে মান্দা উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসের একাডেমিক সুপারভাইজার আব্দুল লতিফ জানান, পরিপত্র অনুসারে কাউকে জোর করে পদত্যাগ করানো সম্ভব নয়। তবে অধ্যক্ষ নজরুল ইসলাম দীর্ঘ অনুপস্থিতির বিষয়ে কোনো ব্যাখ্যা দেননি। আর ইএফটির মাধ্যমে বেতন উত্তোলন বিষয়ে তাদের করণীয় কিছু নেই।