ডিসেম্বরের মধ্যে জাতীয় নির্বাচন আয়োজনের দাবি আবারও জানিয়ে দিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস। তিনি শঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, এই সময়ের মধ্যে ভোট না হলে দেশে আর কখনো নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে না।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রতি হুঁশিয়ারি দিয়ে তিনি বলেন, ‘নানা অজুহাতে নির্বাচন পিছিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করবেন না। আমরা স্পষ্টভাবে জানি—ডিসেম্বরে যদি নির্বাচন না হয়, তাহলে বাংলাদেশে আর কখনও কোনো নির্বাচন হবে না। দেশটি বিদেশি প্রভুদের নিয়ন্ত্রণে চলে যাবে।’
আজ শুক্রবার বিকেল ৩টার দিকে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তিনি প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। দলটির পল্টন থানার ১৩ নম্বর ওয়ার্ড (উত্তর-দক্ষিণ) শাখা বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ৪৪তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে দোয়া মাহফিল ও অসহায় মানুষের মাঝে খাবার বিতরণের আয়োজন করে।
মির্জা আব্বাস বলেন, ‘অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস এখন বিএনপিকে তাঁর মুখোমুখি করেছেন। তিনি জাপানে বসে বিএনপির বিরুদ্ধে মন্তব্য করে বলেছেন, শুধু বিএনপিই ডিসেম্বরের মধ্যে ভোট চায়। অথচ তিনিই প্রথম ডিসেম্বরে নির্বাচনের কথা বলেছেন। এটা তাঁর স্মরণ রাখা উচিত।’
সম্প্রতি ড. ইউনূসের সঙ্গে বিএনপির এক বৈঠকের প্রসঙ্গ টেনে মির্জা আব্বাস বলেন, ‘আমরা বৈঠক থেকে বেরিয়ে আসার পর সন্ধ্যায় আপনার প্রেস সেক্রেটারি বলেছেন, জুনে নির্বাচন হতে পারে। কিন্তু একজন প্রেস সেক্রেটারির কথা আর আপনার কথা এক নয়।’
তিনি আরও বলেন, ‘জিয়াউর রহমান যেসব সংস্কার চালু করেছিলেন, বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার তা কখনোই করতে পারবে না। স্বাস্থ্য ও শিক্ষাসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে তিনি পরিবর্তন এনেছেন—কিন্তু তা নিয়ে কোনো প্রচার চালাননি।’
সরকারের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘এখন যে সরকার সংস্কারের কথা বলছে, তারা বাইরে থেকে লোক এনে সেই সংস্কার করতে চাইছে, যারা এই দেশের নাগরিক নন। যারা দেশকে ভালোবাসে না, তাদের দিয়ে কীভাবে দেশের সংস্কার সম্ভব?’
চট্টগ্রাম বন্দরের নিউমুরিং টার্মিনাল প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘এই টার্মিনাল চালানোর মতো সক্ষমতা আমাদের রয়েছে। তাহলে কেন এটি বিদেশিদের হাতে তুলে দেওয়া হবে? বিদেশিরা টাকা বাংলাদেশে রাখবে না। দেশের মানুষ দিয়ে টার্মিনাল চালানো হোক, বাইরের লোকের দরকার নেই।’
সরকারের দিকে প্রশ্ন ছুড়ে দিয়ে তিনি বলেন, ‘সেন্ট মার্টিনে মানুষ খেতে পায় না, কাপড় নেই, বাচ্চারা স্কুলে যেতে পারে না। তাহলে কী এমন হয়েছে যে বাংলাদেশি নৌকা সেখানে যেতে পারবে না? সেখানে কী ঘটছে, তা জানতে চাই। সাজেকে কী চলছে, তাও জানতে চাই।’
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির সহ–যুববিষয়ক সম্পাদক মীর নেওয়াজ আলী, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সদস্যসচিব তানভীর আহমেদ রবিন এবং অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন পল্টন থানা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক কাজী হাসিবুর রহমান শাকিল।