চট্টগ্রামের কর্ণফুলী উপজেলার মইজ্জারটেক কোরবানির পশুর হাটে এবার বিশেষ আকর্ষণ হিসেবে এসেছে তিনটি উট। আসন্ন ঈদুল আজহা উপলক্ষে যশোরের বেনাপোলের ফিরোজ-মামুন ডেইরি ফার্ম থেকে আনা হয়েছে মরুভূমির এই বিস্ময় প্রাণীগুলো।
হাটে তোলা হওয়ার পর থেকেই নানা বয়সী মানুষ ভিড় জমাচ্ছেন উটগুলো দেখতে। ১২ থেকে ১৫ মণ ওজনের এই প্রাণীগুলোর দাম ধরা হয়েছে ৩০ থেকে ৩৫ লাখ টাকার মধ্যে। যদিও অনেকে দেখতে আসছেন, বেশিরভাগই শুধু ছবি তুলে বা সেলফি নিয়ে চলে যাচ্ছেন, দরদাম করছেন না কেউই।
তথ্য অনুসন্ধানে জানা গেছে, ফিরোজ-মামুন ডেইরি ফার্ম থেকে ট্রাকে করে বৃহস্পতিবার (২৯ মে) উটগুলো আনা হয় মইজ্জারটেক হাটে। এরপর থেকেই ক্রেতা ও দর্শনার্থীদের আগ্রহে হাটে জমে উঠেছে ভিড়।
ফার্মটির প্রতিনিধি গাজী সিরাজুল ইসলাম জানান, দুই বছর আগে ঢাকার একটি পশুর হাট থেকে উটগুলো সংগ্রহ করা হয়। তারপর থেকেই ফার্মে যত্নসহকারে লালনপালন করা হচ্ছে। মূলত শখিন ক্রেতাদের চাহিদা মাথায় রেখেই উটগুলো আনা হয়েছে বলে জানান তিনি।
এক দর্শনার্থী মোহাম্মদ আরিফ বলেন, প্রতিবছর কোরবানির সময় গরু বা ছাগল কিনলেও এবার খবর পেয়ে হাটে উট দেখতে এসেছি। দাম বেশ বেশি, তাই কেনা সম্ভব নয়। তবে যাঁরা শৌখিন ও সচ্ছল, তাঁদের জন্য এটা দারুণ একটি বিকল্প হতে পারে।
বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী সাজ্জাদূর রহমান বলেন, “আসলে আমি শুধু উট দেখতেই এসেছি। চট্টগ্রামে সাধারণত উট দেখা যায় না। কাছ থেকে দেখা ও ছবি তোলা – এটা বেশ মজার এক অভিজ্ঞতা। তবে আমার মতে দামটা একটু বেশি। অনেকে শুধু দেখতেই আসেন, কেনার মানসিক প্রস্তুতি অনেকেরই থাকে না।”
মইজ্জারটেক হাটের ইজারাদার জসিম উদ্দিন জুয়েল বলেন, এটি চট্টগ্রামের সবচেয়ে বড় কোরবানির হাটগুলোর একটি। প্রতি বছর এখান থেকে বিপুলসংখ্যক পশু বিক্রি হয়। এবার উট আসায় হাটে নতুন রকমের বৈচিত্র্য এসেছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, মধ্যপ্রাচ্য, উত্তর ও পূর্ব আফ্রিকা, দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়ায় উট পালন দীর্ঘদিনের ঐতিহ্য। এই প্রাণীটি শুষ্ক অঞ্চলে বেঁচে থাকার জন্য বিশেষভাবে অভিযোজিত। শুধু বাহ্যিক আকর্ষণ নয়, উটের মাংস পুষ্টিগুণেও ভরপুর। এতে রয়েছে উচ্চমানের প্রোটিন, কম ফ্যাট ও কোলেস্টেরল। আয়রন, ভিটামিন ও খনিজ উপাদানে সমৃদ্ধ হওয়ায় অনেক দেশের খাদ্যতালিকায় উটের মাংস গুরুত্বপূর্ণ স্থান দখল করে আছে।