খুলনার কয়রা উপজেলার কালিকাপুর গ্রামে জন্ম আর্জান সর্দারের। আর্জানের বয়স যখন মাত্র দুই বছর, তখন তাঁর বাবাকে সুন্দরবনের বাঘ টেনে নিয়েছিল। মুখে করে ঝুলিয়ে নেওয়ার সময় দুই হাতে যা পেয়েছেন, আঁকড়ে ধরে প্রাণ রক্ষার চেষ্টা করেছিলেন। তবে শেষরক্ষা হয়নি। বাবার লাশটাও পাওয়া যায়নি।
সেই বাবার ছেলে আর্জান সময়ের ব্যবধানে হয়ে ওঠেন সুন্দরবনের কিংবদন্তি বাঘশিকারি। ছোটখাটো গড়নের শান্ত চেহারার মানুষটির ছিল চওড়া কপাল আর বিরাট গোঁফ। উনিশ শতকের মাঝামাঝি সময়ে শিকারি আর্জান সর্দারের সঙ্গে দেখা হয় বহু গ্রন্থের প্রণেতা শিবশঙ্কর মিত্রর। সুন্দরবনসংলগ্ন উপকূলীয় জনপদে থাকা পৈতৃক জমি উদ্ধারে এসে লেখকের সঙ্গে তাঁর দেখা হয়েছিল। তাঁর বর্ণনায় আর্জান সর্দারের চেহারা এমন।
শিবশঙ্কর মিত্র ‘সুন্দরবনের আর্জান সর্দার’ বইয়ে লিখেছেন, আর্জান সর্দার তাঁর জীবনের এক ‘আবিষ্কার’। আর্জান তাঁর জন্মস্থান কালিকাপুর থেকে পরে কয়রার সুন্দরবনসংলগ্ন মহেশ্বরীপুর ইউনিয়নের সর্দারপাড়ায় এসে বসবাস শুরু করেছিলেন। এক দশকের বেশি সময় ধরে আর্জানের সঙ্গে লেখকের যোগাযোগ ছিল। একসঙ্গে তাঁরা ঘুরেছেন সুন্দরবনের গহিনে। আর্জানের বাঘ শিকারের গল্প উঠে এসেছে তাঁর লেখায়।